সিরিয়ার আলেপ্পোতে একটি সামরিক বাসে রকেট হামলায় কমপক্ষে ১০ সেনা নিহত হয়েছে। সরকারবিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহীদের চালানো এ হামলায় আরো নয়জন আহত হয়েছে। শুক্রবার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় এই প্রদেশর আনজারা শহরে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে।

সিরিয়ার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রামি আবদেল রহমান বলেন, আলেপ্পোর আনজারা এলাকায় দেশটির সেনাবাহিনীর একটি বাস হামলার শিকার হয়। বাসের যাত্রীদের সবাই নিজেদের বাড়ির দিকে রওনা হয়েছিলেন। হামলাকারীরা অ্যান্টি-গাইডেড রকেট জাতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলেও জানিয়েছেন রামি আবদেল রহমান।

সিরিয়ার কট্টর ইসলামপন্থী গোষ্ঠী ও আলেপ্পোর সবচেয়ে বড় সশস্ত্র দল হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস) নিজেদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে ইতোমধ্যে হামলায় পুড়ে যাওয়া সেই বাসের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেছে, তবে সরাসরি সেই হামলার দায় এখন পর্যন্ত স্বীকার করেনি কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন। আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়দা নেটওয়ার্ক থেকে সরে আসা কয়েকজন নেতা গঠন করেছেন এইচটিএস।

২০১১ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয় সিরিয়ায়। পাশাপাশি উত্থান ঘটে ইসলামিক স্টেট (আইএস), হায়াত তাহরির আল শামসহ কয়েকটি ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠীর।

সরকারবিরোধী গণতন্ত্রপন্থী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জঙ্গিগোষ্ঠীর তৎপরতার কারণে দ্রুত সিরিয়ার বিশাল অংশের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন প্রেসিডেন্ট বাশার। ২০১৫ সালে দেশের পাঁচ ভাগের চার ভাগই দখল করে নেয় সরকার বিরোধীরা।

ওই বছরই বাশার আল আসাদকে সামরিক সহায়তা দেওয়া শুরু করে রাশিয়া ও ইরান। এবং এই দুই দেশের সহযোগিতায় ফের দেশের বেশিরভাগ অংশে নিজের কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সক্ষম হন বাশার আল আসাদ।

বর্তমানে একমাত্র দেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ইদলিবের একটি বড় অংশ ও পার্শ্ববর্তী আলেপ্পো, হামা ও লাটাকিয়া প্রদেশে টিকে আছে সিরিয়ার সরকারবিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠী। ২০২০ সালে সরকার ও এসব গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিও হয়েছে।

সেই চুক্তির পর এই প্রথম সিরিয়ার সেনাবাহিনী লক্ষ্য করে বড় কোনো হামলা ঘটল।